নবান্ন - ফসল কাটার উৎসব। গ্রাম-বাংলায় প্রতিবছর হেমন্তকালে ঘরে ফসল তোলার উপলক্ষে নাচ-গানসহ নতুন ধানে তৈরি নানারকম খাবারের আয়োজনের মধ্য দিয়ে আনন্দঘন পরিবেশে পালিত হয় নবান্ন উৎসব ।
মই প'ড়ে গেছে ক্ষেতভরা পাকা ধানে" - পাকা ধানে মই দেওয়া" একটি বাংলা প্রবাদ । এর অর্থ হলো প্রায়সম্পন্ন কোনো কাজ পণ্ড করা। অন্যের ক্ষতি করা। জমিতে মই দেওয়া হয় বীজ বোনা কিংবা চারা লাগানোর আগে; মাটিকে নরম ঝুরঝুরে করার জন্য । কিন্তু যে জমি ফসলে পূর্ণ, যখন ফসল কাটার সময় আসন্ন তখন মই দিলে তো সব ফসল নষ্ট হয়ে যাবে। ক্ষতি বোঝাতে ব্যবহৃত এই প্রবাদটিকে কবি কৌশলে তাঁর কবিতায় ব্যবহার করেছেন।
আল্পনা - গ্রামে বিভিন্ন উৎসব উপলক্ষে বাড়ির আঙিনায় হাতে আঁকা নকশা। ঐতিহ্যগতভাবে আতপ চাল বেটে তার সঙ্গে প্রয়োজনীয় পরিমাণ জল এবং নানারকম রং মিশিয়ে আপনার উপকরণ প্রস্তুত করা হয়। ইদানীং সিনথেটিক রং দিয়েও আল্পনা আঁকা হয় ।
মরাই - হোগলা, বেত ইত্যাদি দিয়ে তৈরি শস্য জমা রাখার বড় আধার।ধানের গোলা।
লক্ষ্মী বোধ হয় বাণিজ্য ত্যাজি এবার নিবসে চাষে - প্রচলিত একটি প্রবাদ আছে— “বাণিজ্যে বসতি লক্ষ্মী"। অর্থাৎ, ব্যবসায়- বাণিজ্যে প্রচুর অর্থলাভ হয় তথা ধন-সম্পদের দেবী লক্ষ্মীর আগমন ঘটে । আলোচ্য কবিতায় কবি প্রবাদটিকে পাল্টে দিয়েছেন। কবিতায় বর্ণিত কৃষকের মাঠে এবার এমন ফসল হয়েছে যে, কৃষকের মনে হচ্ছে লক্ষ্মী দেবী এবার বাণিজ্যের পরিবর্তে ফসলের ক্ষেতে বিরাজ করছেন। আর তাই প্রচুর অর্থপ্রাপ্তির সম্ভাবনা কৃষককে আনন্দ-স্বপ্নে বিভোর করছে।
দাওয়া - ঘরের আঙ্গিনা
বালির বাঁধনে বাঁধিনু বন্যাধারা - বাংলা প্রবাদ "বালির বাধ"কবি শৈল্পিকভাবে এই কবিতায় ব্যবহার করেছেন। “বালির বাঁধ”-এর অর্থ হলো এমন কিছু যা ক্ষণভঙ্গুর বাঁচানোর লক্ষ্যে সকল দুর্যোগ ও ধ্বংসের বিরুদ্ধে নিজের যথাসাধ্য চেষ্টাকে কাজে লাগিয়েছেন কিন্তু তার সবই বালির বাঁধের মতো শেষ পর্যন্ত বিফলে গেছে।
বুকের রক্ত জল করে কভু সেচিনু পান্ডু চারা - কৃষকের ফসল ফলানোর অপরিহার্য শর্ত হলো পর্যাপ্ত জলসেচের ব্যবস্থা। এদেশের প্রেক্ষাপটে এই সেচ ব্যবস্থাও কখনও হয়ে ওঠে অনিশ্চিত। নানা প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে বাংলার কৃষক তার ফসলের মাঠ সেচ দিয়ে সজীব রাখে। মলিন মৃতপ্রায় চারাকে বাঁচিয়ে রাখার প্রাণপণ শ্রম ঢালে ।
পাণ্ডু - ফ্যাকাশে মলিন।
নাবি - দেরিতে হয় এমন
দুর্বিপাক - বিপদ। দুর্যোগ।
অপ্রগলভ - অচঞ্চল বিনয়ী, আচরণে শালীন।
আরও দেখুন...